প্রকাশের সময় 13/09/2024
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক, নাসিক ২ নং ওয়ার্ডের ভুমিদস্যু, মাদকের শেল্টার দাতা, চাঁদাবাজ সেই আমিনুল হক রাজু এলাকায় হাসিনা সরকারের পতনের পর গাঁ ঢাকা দিলেও ফের এলাকায় ফিরতে তৎপর হয়ে উঠেছে।
রাজুর বাবা কাসেম আলী তার ছেলেদের বাঁচাতে প্রতিদিন বিএনপি নেতা কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করছেন বলে জানা যায়। এ নিয়ে এলাকায় বেশ গুঞ্জন উঠলেও বিএনপি একাধিক নেতাকর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়াও তাকে প্রতিহত করবে বলেনও অনেকে ফুঁসে উঠছেন।
তাদের কেউ কেউ বলছেন আওয়ামী লীগে আমলে অবৈধ ও অনৈতক ভাবে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন আবার স্বরূপে ফিরে পূর্বের ন্যায় কমকান্ড চালিয়ে যাবে তা হতে দেয়া যাবেনা।
স্থানীয়দের দাবি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে রাজু প্রভাব ঘাটিয়ে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ভুমিদস্যুতাসহ মাদক কেনা-বেচাকেনার শেল্টার দিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বলে গেছেন। এক সময় কঠিন দুরাবস্থায় দিন কাটালেও এই সরকারের আমলে এসব অপকর্ম করে অঢেল সম্পতি ও বাড়ি গাড়ির ও অর্থ বৈভব গড়ে তুলেছেন। বিশেষ করে তার তৈরী বিলাস বহুল আলিসান ১০ তলা বাড়িটি চোখে পড়ার মতো।
তারা জানান, এক সময়ে চিটাগাংরোড রেন্ট-কার-স্ট্যান্ডের চাঁদাবাজির মধ্য দিয়েই উথান হয় আমিনুল হক রাজুর। এরপর থেকে তাকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ভুমিদস্যুতা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধে তার বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় রয়েছে একাধিক অভিযোগ।
জানাগেছে, আমিনুল হক রাজু ভাই শফি ভুইয়া, তার রোনের স্বামী আমজাদ ভান্ডারসহ আরও কয়েকজন দিয়ে জমি দখল বেদখলের কাজ করতো। কোনে জমি থেকে সুবিধা আদায় করতে না পারলে সেখানে তাদের মাধ্যমে জোরপূর্বক ইট, বালু, সিমেন্ট দিতো। সেখানে নিন্মমানের মালামাল দিতো । না হলে তাদেও চাহিদা মাফিক চাঁদা দিকে বাধ্য করতো।
বিশেষ করে আজগর হাজী ওয়াকফ এস্টেটের বেদখলকৃত শতকোটি টাকার সম্পত্তি উদ্ধারের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে ফের আলোচিত হয় সেই আমিনুল হক রাজু।
এছাড়াও দক্ষিণ পাড়া আমজাদ মার্কেট এলাকায় রাজুর শ্বশুর দেলোয়ার কসাই তার নিজ বাড়িতে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভয়াবহ মাদক হিরোইন, ইয়াবা ও গাঁজা বিক্রির জমজমাট ব্যবসা করতেন। ওখানে ওপেন মাদক বিক্রি করে আশেপাশে কেউ এর প্রতিবাদ করতে সাহস পেত না কারণ সে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আমিনুল হক রাজুর শ্বশুর ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আমিনুল হক রাজু ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মিজমিজি দক্ষিণপাড়া এলাকার সারোয়ার কাদেরী নামে এক ব্যবসায়ী। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, সিদ্ধিরগঞ্জের হাজেরা মার্কেটের দক্ষিণে জমি বিক্রির জন্য ১০ কাঠা জমি এক ক্রেতাকে দেখানোর সময় আমিনুল হক রাজু, তার সহযোগী আল আমিন, দেলোয়ার হোসেন দোলন এবং আ. আজিজ মিয়া সন্ত্রাসী কায়দায় ও দেশীয় অস্ত্রসহ তাকে ভয়ভীতি ও মেরে ফেলার হুমকি দেন।
অভিযোগপত্রে তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমিনুল হক রাজু এবং তার সাথী ছাড়া অন্য কেউ এই এলাকায় কোনো জমি কেনাবেচা করতে পারবে না বলে শাসিয়ে দেয়। আর ব্যবসা করলে তাদেরকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। তাদের এই প্রস্তাব অস্বীকার করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন আমিনুল হক রাজু ও তার সহযোগীরা।
এদিকে আমিনুল হক রাজু তার ভাইয়ের মালিকাধীন মিজমিজি দক্ষিণ পাড়া ব্রিজের কাছে ওয়াসিংপ্লান্ট ফ্যাক্টরিতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে গ্যাস চুরি করে মাসে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। ফ্যাক্টরিতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে চালিয়েছে বড় বড় বয়লার যা দিয়ে ওয়াসিংপ্লান্ট কাজে ব্যবহার করা হয়।
সম্প্রতি আমিনুল হক রাজুর ফিরে আসার গুঞ্জন নিয়ে অশান্ত হয়ে উঠছে নাসিক ২ নং ওয়ার্ড। স্থানীয় সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও বিএনপির একটি অংশের দাবি রাজু যেনো বিএনপির ছায়াতলে এলাকায় আর না ফিরে আসে। আর যদি ফিরে আসে তারাই তাকে প্রতিরোধ করবে।