প্রকাশের সময় 27/01/2025
কৃষকদের কে বাদ দিয়ে সংস্কার আইন মেনে নেওয়া হবে না হাট ও ঘাট থেকে সরকারি ইজারা প্রথা বাতিলের দাবি করা হয়েছে কুড়িগ্রামের কৃষক সমাবেশ থেকে। তারা বীজ বিপনন ও কৃষি বীজ আইন-২০১৮ বাতিলেরও দাবি করেছেন। রোববার দুপুরে চিলমারী উপজেলার জোড়গাছ বাজার সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদ তীরবর্তী শফিউল আলম রাজা স্টেডিয়াম মাঠে অনুষ্ঠিত উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়। মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ূম বলেন, “বাংলাদেশের হাট-ঘাটে ইজারা প্রথা বাতিল করতে হবে। যে কৃষকের শ্রমে-ঘামে ফসল উৎপন্ন হয় সেই কৃষকের জন্য কালো আইন বীজ বিপনন ও কৃষি বীজ আইন-২০১৮ বাতিল করতে হবে। “সরকার কৃষকের নামে প্রতিবছর ভর্তুকি হিসেবে ৪০ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ আমার কৃষককে না দিয়ে বিদেশি করপোরেশন বিভাগকে দেয়। যেখানে আমার কৃষককে মাত্র ৫০০ টাকা ঋণের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কোমড়ে দড়ি বেঁধে নিয়ে যায়।” তিনি বলেন, “সবচাইতে বেশি খাজনা তোলা হয় অদৃশ্য খাজনা হিসেবে। এই খাজনা তুলে নিয়ে উপদেষ্টারা এখন নাকি হেলিকপ্টারে চড়ে বেড়ায়। কৃষকের খাজনার টাকা দিয়ে অফিসারদের নতুন নতুন ব্রান্ডের গাড়ি কিনে দেওয়া হয়। তারা গাড়ি চালায়, তাদেরকে তেল কিনে দেওয়া হয়। ড্রাইভার রাখা হয়। সেই গাড়িতে পরিবার-পরিজন ভ্রমণও করেন। ঢাকা শহরে দুইতলা-তিনতলা রাস্তা নির্মাণে যোগান দেওয়া হয়। এ সবই কৃষকদের সঙ্গে উপহাস মাত্র।” উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশ কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ হাসান নলেজের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন নগর পরিকল্পনাবিদ নিয়াজ রহমান, শিক্ষা ও শিশু সুরক্ষা আইন (শিশির) এর আহ্বায়ক রাখাল রাহা, অর্থনীতিবিদ দিদারুল ভূইয়া, মহাসমাবেশ কমিটির সদস্যসচিব আমিনুল ইসলাম বীর, চিলমারী প্রেসক্লাবের সভাপতি নজরুল ইসলাম সাবু, প্রেস ক্লাব চিলমারীর সভাপতি মনিরুল আলম লিটু, চিলমারী সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সাওরাত হোসেন সোহেল। বক্তারা বলেন, দেশভাগের পর বিভিন্ন আন্দোলনে কৃষকরা প্রাণ দিলেও সেই কৃষককে কোনো সরকার মর্যাদা দেয়নি। তাদের রক্ত চুষে সরকাররা বিদেশি কোম্পনিগুলোকে সুবিধা দিলেও কৃষককে সবসময় বঞ্চিত থাকতে হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানিগুলো এখন সার-বীজ-কীটনাশকের ব্যবসা করে জমির উর্বরতা নষ্ট করলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তারা আরো বলেন, এখানকার তাঁতী-জেলে-কৃষক সমাজ মহাজনদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। দেশকে বাঁচাতে হলে ১২ দফা দাবি মেনে নিতে হবে। তাহলে অন্তর্বর্তী সরকারের যে সংস্কার আইন পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়ন হবে। কৃষককে বাদ দিয়ে সংস্কার আইন মেনে নেওয়া হবে না মন্তব্য করে বক্তারা বলেন, এত এত কমিশন হল, অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘ভূমি সংস্কার কমিশন’ করবার কথা সরকারের মাথায় এল না। তাই কৃষকের কল্যাণে, মঙ্গলে, দীর্ঘদিনের শোষণ বঞ্চনা-দুঃখ দূর করতে এ আন্দোলন চলবে।