বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত রিপন মিয়া হত্যা মামলার বাদী আকতার হোসেনের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় ও চাদাঁবাজির অভিযোগ করেছেন নিহত রিপন মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম।
১৮ জানুয়ারি (শনিবার) দুপুরে বকশীগঞ্জ পৌর শহরের নিরিবিলি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন নিহত রিপন মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, রিপন মিয়া ঢাকায় একটি কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতো। ০৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ঢাকার উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে।
পরের দিন গ্রামের বাড়ি বাট্টাজোড় পানাতিয়া পাড়ায় তার লাশ দাফন করা হয়।
এই ঘটনায় রিপন মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম বাদী হয়ে মামলা করতে চাইলেও খাদিজা বেগমকে কিছু না জানিয়েই ২৬ আগস্ট উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা করেন আকতার। মামলায় ক্ষমতাচুত্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ নামীয় ১৮ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনকে আসামী করা হয়। নামীয় ১৮ জনের মধ্যে বকশীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরকে ০৭ নাম্বার আসামি, বকশীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বিজয়কে ০৮ নাম্বার আসামী, সমাজসেবক গাজী আমানুজ্জামানকে ০৯ নম্বর আসামি ও বকশীগঞ্জ উপজেলার পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জুম্মান তালুকদারকে ১৭ নাম্বার আসামী করা সহ বকশীগঞ্জের ১৩ জনকে মামলায় আসামী করা হয়।
নিহত রিপন মিয়ার স্ত্রী খাদিজা বেগম বলেন মূলত চাদাঁবাজি করার জন্যই সে এই মামলার বাদী হয়েছে এবং বকশীগঞ্জের সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরকে হয়রানি করার জন্যই তাকে আসামি করেছেন।
রিপন হত্যা মামলার সাথে বকশীগঞ্জের সাবেক মেয়র নজরুল ইসলাম সওদাগরসহ বকশীগঞ্জের কোন মানুষ জড়িত না কারন সে মারা গেছে ঢাকার উত্তরায়। আকতার লাশকে পুজিঁ করে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য ও চাদাঁবাজি করেছে। খাদিজা বেগম আরো বলেন আমি শুনেছি আমানুজ্জামান নামে এক ব্যক্তির নিকট দুই লক্ষ টাকা গ্রহণ করে মামলা থেকে তার নাম কর্তন করা হয়েছে। তাছাড়া মামলায় জড়িয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অন্তত দুই শতাধিক মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়েছে।
০৫ আগস্টের আগে আকতার পরিবার পরিজন নিয়ে থাকতো একটি কুড়ে ঘরে। মানুষের কাছে হাত পেতে চলতো তার সংসার। কয়েক মাসের ব্যবধানে আকতার হোসেন লাখপতি বনে গেছেন। পাকা বিল্ডিং করেছে। দামী দামী আসবাবপত্র ও নতুন মোটরসাইকেল কিনেছে। এছাড়াও সে প্রতিনিয়ত তার ফেইসবুকে প্রোফাইলে বকশীগঞ্জে বসবাসকারী একেক জনের ছবি পোষ্ট করে ভয়ভীতি দেখায় মূলত টাকা আদায়ের জন্য। সমাজের ধনী শ্রেণীর মানুষদের টার্গেট করে সে। পরবর্তীতে তাদের সাথে যোগাযোগ করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মামলায় আসামী করার হুমকি দেয়। সরকারি বে-সরকারি কয়েক লাখ টাকা অনুদান পেয়ে আত্মসাত করেছেন চাদাঁবাজ আকতার। স্বামীর মৃত্যুর এক মাস পরেই আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। বর্তমানে গার্মেন্টেসে চাকুরী করে মানবেতর জীবন যাপন করছি।
আকতারের চাদাঁবাজি বন্ধ ও ন্যায় বিচারের দাবিতে প্রধান উপদেষ্ঠাসহ প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেন তিনি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আকতার হোসেন বলেন, সংবাদ সম্মেলন করা মহিলা নিহত রিপনের স্ত্রী নয়। রিপনের স্ত্রী এবং কন্যা আমাদের বাড়িতেই রয়েছে। এ অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক সকাল প্রতিদিন
কারিগরী সহায়তায় তাইপুর রহমান তপু।