মাহবুব লিটু, ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণে বাদাম ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি দেখা দেওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চরাঞ্চলের চাষিরা। বাদাম ক্ষেত রক্ষার্থে চরাঞ্চলের চাষিরা বিষাক্ত পোঁকা দমনে কীটনাশক ঔষদ প্রয়োগ করেও ফসল রক্ষা করতে না পাড়ায় দিশাহারা পড়েছেন। সোমবার বিকালে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চরগোরকমন্ডল এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ওই এলাকায় পতিত জমিসহ চরাঞ্চলের ব্যাপক পরিমাণে কৃষকরা বাদামের চাষাবাদ করেছে। চারিদিকে যে দিকে দু-চোখ যায় শুধু বাদাম ক্ষেত আর ক্ষেত। দুর থেকে বাদামের সবুজ ক্ষেত দেখলে মন জুড়িয়ে যাবে। তবে কাছাকাছি গিয়ে বাদাম ক্ষেত দেখলে অনেকের মনটা মুহূর্তের মধ্যে খারাপ হয়ে যাবে। যে পরিমাণে কৃষকের কষ্টের ফসলে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণ করেছে। বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণে প্রতিটি বাদামের কচি কচি মগ ডাল ও পাতায় পচন ধরে মরে যাচ্ছে। চোখের সামনে বিঘার পর বিঘা বাদাম খেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমন দৃশ্য দেখে কৃষকরা চরম ভাবে দিশাহারা হয়েছে পড়েছেন । চরাঞ্চলের কৃষি অফিসের পরামর্শ না পেয়েও ফসল রক্ষার্থে বর্তমানে কৃষকরা রৌদ্র উপেক্ষা করে কীটনাশক ঔষধ প্রয়োগ, নিড়ানী ও সার ব্যবহার করছেন। ফসল রক্ষার্থে ফুলবাড়ী কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন বাদাম চাষিরা। উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল এলাকার বাদাম চাষি হানিফ মিয়া ও রসুল মিয়া, আকবর আলী ও চান্দু মিয়া জানান, আমরা প্রতি বছর বাদাম চাষে হাঁড় ভাঙ্গা পরিশ্রম করি। বাদামের ভালো ফলনও হয়। আমরা বিঘা প্রতি ৮/৯ মণ বাদাম উৎপাদন করি। প্রতি মণ বাদামের মুল্যও ভালো পাই। কিন্তু গত ১০ থেকে ১৫ থেকে আমাদের বাদাম ক্ষেতে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণে কচি কচি মগডাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক চেষ্টা করছি এখন পর্যন্ত পচন ও মগডাল ও পাতায় পচন বন্ধ হচ্ছে না। আমরা খুবই চিন্তিত ফসল নিয়ে। গত বছর কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়েছি। এ বছর কৃষি অফিসের কোন পরামর্শ পাইনি। তারা ফসল রক্ষার্থে কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন। একই এলাকার বাদাম চাষি লাভলু মিযা জানান, চার বিঘা জমিতে বাদাম রোপণ করেছি। অন্যান্য ফসল পাট, ভুট্রার চেয়ে পরিশ্রম ও খরচ কম। এ জন্য আমাদের চরাঞ্চলের অনেক কৃষক বাদাম চাষে বেশ আগ্রহী হচ্ছে। এ বছর আমার চার বিঘা জমির বাদাম ক্ষেত পোঁকার আক্রমণে মগডাল গুলো ঝরে যাচ্ছে। দেখছেন না প্রতিটি বাদামের মগডালে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণ করছে। অনেক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি তার ফসল রক্ষার্থে কীটনাশক ঔষধ দিচ্ছেন। তিনি আরও জানান এখানে অধিকাংশ কৃষকের বাদাম ক্ষেতে বিষাক্ত পোঁকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছেন। কোন ঔষধ ও কাজ করছে না। ফসল রক্ষা করতে না পারলে কৃষকদের অনেক বড় লোকসান পড়বে। ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা: নিলুফা ইয়াসমিন জানান, এ বছর মোট ৭ হেক্টর জমিতে কৃষকরা বাদামের চাষবাদ করেছে। তিনি আরও জানান, সব এলাকায় আমাদের সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ শুধু বাদাম চাষিদের নন, অন্যান্য ফসল রোপণকারী চাষিদের মাঝে বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা সব সময় অব্যাহত রয়েছে। তবে চরগোরকমন্ডল এলাকার বাদাম চাষিরা আমাদের কৃষি অফিসের কাউকে জানায়নি। তারপরও ওই সব কৃষকদের ফসল রক্ষার্থে মাঠে গিয়ে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। সেই সাথে আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের কৃষকরা বাদাম চাষে লাভবান হবেন চাষিরা।
তথ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনকৃত গণমাধ্যম দৈনিক সকাল প্রতিদিন
কারিগরী সহায়তায় তাইপুর রহমান তপু।