প্রকাশের সময় 15/10/2024
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার উদ্যোগে সংগঠিত গণঅভ্যুথানের ফসলে স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের সাথে থাকা সংশ্লিষ্ট রাজনীতিকবর্গ স্বস্তিতে নেই । এমন কি ফেঁসে গেছে সাংবাদিকতা পেশার সাথে থাকা ব্যক্তিবর্গও। শীর্ষ পর্যায় হতে শুরু করে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও আত্মগোপনে আছে, নতুবা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে—-এমন খবরের সত্যতা রয়েছেই। এদিকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম গেল ১৩ অক্টোবর বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার পক্ষে যেসব গণমাধ্যম ফ্যাসিস্ট সরকারকে সহযোগিতা করেছে তাদের বিচার করা হবে। এরই মধ্যে কয়েকটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কয়েকজন গ্রেপ্তারও হয়েছেন। এ ছাড়া তদন্তে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।’ সূত্রমতে, ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাংবাদিকবৃন্দের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। যাদের মধ্যে সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবু ও শ্যামল দত্ত অন্যতম। অন্যদিকে অতি মাত্রায় চাটুকারিতার তকমা নিয়ে থাকা একাত্তর টিভির সাবেক দুই সংবাদ কর্মী ও দম্পতি ফারজানা রুপা ও শাকিল পুলিশি রিমান্ডে থাকার পর এখন কারাগারে জীবন পার করছেন। এছাড়াও জ ই মামুন, প্রভাস আমিনদের মত সাংবাদিকদেরকে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের সরকারে শেষ সময়ে শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হওয়ার পরে সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান আরো বিপদে পড়ে গেছেন। তাঁর সম্পাদনা ও প্রকাশনায় প্রকাশিত হতে থাকা দৈনিক আমাদের নতুন সময়, আমাদের অর্থনীতি ও আওয়ার টাইমের প্রকাশনা বন্ধ আছে। অন্যদিকে ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে ৫ আগস্টের পর হতেই দেশের ৫০ জন সাংবাদিকের বিষয়ে বলা হচ্ছিল যে, তারা বিবেক শ্রেণির প্রতিনিধি হয়ে সাংবাদিকতার শর্ত পূরণ করে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করেন নি। অপরদিকে সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক মুন্নী সাহার ব্যাংক হিসাব তলব করার মধ্য দিয়ে বর্তমান সরকারের নীতি আরো স্পষ্ট হয়ে প্রমাণ করে যে, অবৈধ পন্থায় সম্পদশালী হওয়ার সুযোগ নেই, থাকছে না। এদিকে আলোচিত, সমালোচিত প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জনের মত সাংবাদিকেরা বর্তমানে নিজ নিজ কর্মস্থলে আর ফিরতে পারেনি। সেই নামের তালিকা দীর্ঘ। বৈষম্যবিরোধি ছাত্র জনতার বিরুদ্ধে থাকা আওয়ামী বলয়ের সাংবাদিক প্রতিদিনের বাংলাদেশ সম্পাদক মুস্তাফিজ শফি অবশ্য আছেন বহাল তবিয়তে। কথিত আছে, কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রতিহত করতে যেয়ে শেখ হাসিনা যখন দেশের জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের সাংবাদিকদের ডেকেছিলেন, সেদিন জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে মুস্তাফিজ শফি শেখ হাসিনাকে ‘আপা’ সম্বোধন করে তার পাশে থাকার দীপ্তময় ঘোষণায় সিক্ত ছিলেন। সেই শফি এখনো পর্যন্ত প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতি প্রণয়নে থেকে আওয়ামী লীগের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে চান বলে জানা গেছে। শফি কেন এমনটা করতে পারছেন? এই প্রশ্নের উত্তর মিলছে তার পত্রিকার প্রকাশক পলাতক রংধনু গ্রুপের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বদান্যতায়। যিনি স্বপরিবারে দেশ ছাড়তে সক্ষম হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সুবিধা নেয়া ব্যবসায়ী হিসাবে রফিকুল ইসলামের নাম সবার আগেই আসে। যদিও ইতোমধ্যে তার ভাই মিজান গ্রেফতার হয়েছে। একইভাবে বিগত সরকারের সুবিধা নেয়া সাংবাদিকের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিলেন মুস্তাফিজ শফি। অথচ মুস্তাফিজ শফিরও গ্রেফতার হওয়ার কথা থাকলেও টিভি টক শোর অনিয়মিত মুখ হওয়াতে তিনি থেকে গেছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনটা বলছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য তথা একজন গুনী সাংবাদিক।