প্রকাশের সময় 06/12/2024
সিদ্ধিরগঞ্জের সানারপাড় শেখ মোরতোজা আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে ক্ষেপিয়ে তুলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে সাবেক ম্যানেজিং কমিটির বহুল বিতর্কিত সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু ও তার সহযোগীরা। গণভ্যুত্থানে দেশের পটপরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহিরুল হককে অন্যায়ভাবে বিতারিত করেও ক্ষ্যান্ত হচ্ছেনা ওই সুবিধাবাদী মহলটি। প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক যেন স্বপদে বহাল থেকে দায়িত্ব পালন করেত না পারে সেজন্য কিছু শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) দুপূর ১২ টার দিকে স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করিয়েছে রবিউল চক্র। তবে তাদের উসকানি আমলে না নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ শিক্ষার্থী মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ করেনি বলে জানা গেছে।
মানববন্ধনে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য রবিউল ইসলাম বাবু প্রধান শিক্ষক জহিরুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে কাল্পনিক বক্তব্য দেয়। শিক্ষার্থীদের জোর করে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অপত্তিকর স্লোগান দেওয়ায়। এতে মানববন্ধনে অংশ গ্রহণ না করা অনেক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডের এক আওয়ামী লীগ নেতার অন্যমত সহযোগী রবিউল ইসলাম বাবু। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে ওই নেতা ও সানারপাড় এলাকার ক্ষমতাধর এক বড় ভাইয়ের প্রভাব কাটিয়ে তিনি ম্যানেজিং কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। তখন ১১ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ভর্তি ফি বাবত আড়াইহাজার করে টাকা নিয়ে বিদ্যালয় তহবিলে জমা দেন ১ হাজার টাকা করে। বিষয়টি জানাজানি হলে তার কাছ থেকে বাকি টাকা ফেরত নিয়ে কমিটির অন্য সদস্যরা তাকে আর স্কুলে প্রবেশ করতে দেয়নি। এর পর থেকেই তিনি প্রধান শিক্ষক জহিরুল হকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার শুরু করেন। অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ করেন সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে। তবে তদন্তে এসব অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। বহু চেষ্টা করেও প্রধান শিক্ষককে গায়েল করতে না পেরে গত ৫ আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে দেশের পটপরিবর্তন হলে পালিয়ে যায় কাউন্সিলর বাদল। রবিউল ইসলাম ভোল্ড পাল্টিয়ে বনে যায় বিএনপি কর্মী। সুযোগ সন্ধানী রবিউল স্কুলটিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে উসকানি দিয়ে প্রধান শিক্ষক জহিরুল হকের বিরুদ্ধে কিছু শিক্ষার্থীদে ক্ষেপিয়ে তুলে। তাদের দিয়ে আন্দোলন করিয়ে জহিরুল হককে স্কুল থেকে বিতারিত করায়। প্রধান শিক্ষক জহিরুল হক যেন আর স্কুলে আসতে না পারে তার পিছনে অন্যতম ভূমিকা পালন করছে নব্য বিএনপি রবিউল চক্র। স্কুলের অধিকাংশ শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় বাসিন্দা জহিরুল ইসলামকে স্কুলে এনে দায়িত্ব পালনের পক্ষে অবস্থানের বিষয়টি জানতে পেয়ে রবিউল চক্র নতুন ফন্দি করে। কলেজ, প্রাথমিক ও হাইস্কুলের কিছু শিক্ষার্থী একত্র করে মানববন্ধ করিয়ে প্রতিষ্ঠানতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র জানায়, প্রায় ৭-৮ বছর আগে চট্টগ্রামে সরকারি চাকরি করা অবস্থায় অর্থ আত্মসাত করে পালিয়ে সানারপাড় চলে আসে রবিউল ইসলাম। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়। যা চলমান রয়েছে। ওই মামলা হওয়ার পর তিনি সৌদি আরব চলে যান। তবে টিকতে না পেরে দেশে ফিরে আসে। কাউন্সিলর বাদলের সাথে মিশে গিয়ে দলীয় প্রভাববিস্তার করে বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসার কমিটিতে প্রবেশ করে অর্থ আত্মসাত শুরু করেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক জহিরুল হকের কারণে ওই প্রতিষ্ঠানে সুবিধা করতে না পেরে তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করাই যেন তার পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও এসব অভিযেগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন রবিউল ইসলাম।