প্রকাশের সময় 20/02/2025
‘ভাষার জন্য প্রাণ দেওয়ার ইতিহাস পৃথিবীতে বিরল। বাঙালি সেই ইতিহাস রচনা করেছে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারি। ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই স্বাধকিার ও স্বাধীনতার সংগ্রামে রুপান্তরিত হয়। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, জনগনের ভাত ও ভোটের অধিকার, দুর্নীতি-দুবৃত্তায়ন, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, দলীয় ও ধর্মীয় উগ্রবাদ মুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ১৯৫২ থেকে ২০২৪-এর চেতনায় জাতি গঠনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে’ বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ’র শীর্ষ নেতৃদ্বয় বলেছেন, ‘২০২৪’র গণঅভ্যুত্থান প্রমান করে ১৯৫২’র ভাষা আন্দোলনের চেতনা ফুড়িয়ে যায় নাই। আজও অধিকার আদায় ও প্রতিষ্ঠায় সকল আন্দোলনে একুশের চেতনা অনুপ্রেরনার উৎস। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন। নেতৃদ্বয় মহান ভাষা আন্দোলনে শহীদ ও অংশগ্রহন কারী ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের প্রতি গভীরতম শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ‘১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রæয়ারির রক্তঝরা পথে শুরু হওয়া এই যাত্রাই পরবর্তীকালে ১৯৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধ, ১৯৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা পেয়েছে। প্রতিটি সংগ্রামে ছাত্র ও শ্রমজীবীরা শুধু অংশগ্রহণই করেনি, নেতৃত্ব দিয়েছে-প্রাণ দিয়ে রচনা করেছে বিজয়ের ইতিহাস। এ ধারাবাহিকতাই প্রমাণ করে, গণতন্ত্রের চেতনার মূলে রয়েছে ছাত্র ও কৃষক-শ্রমিক মেহনতি মানুষের সেই অদম্য শক্তি, যা আজও প্রজ্বলিত।’ তারা বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। ছাত্রদের এই আত্মত্যাগই পরবর্তীকালে স্বাধিকার আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ এবং গণতন্ত্রের সংগ্রামের ভিত্তি তৈরি করেছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঐতিহাসিক ঘটনা দীর্ঘ ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকা ফ্যাসীবাদী সরকারের পতন ঘটিয়ে ছাত্ররা আবারও প্রমাণ করে ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের চেতনা আজও তাদের রক্তে স্পন্দিত।’ তারা ২০২৪এর গণআন্দোলনে প্রতিষ্ঠিত বর্তমান অর্ন্তবর্তীকালিন সরকারের প্রতি ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের পূনাঙ্গ তালিকা প্রকাশের জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ভাষা সৈনিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন ও রাষ্ট্রীয় মর্যাদা না দেওয়া গত ৫৩ বছরের সকল শাসকদেরই ব্যর্থতা। এই ব্যর্থতার দায় বিগত সকল শাসক গোষ্ঠীর। এই ব্যর্থতার দায় থেকে শাসকরা মুক্তি পেতে পারেন না।’ নেতৃদ্বয় বলেন, ‘প্রতি বছর ভাষা দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হয়। তারপরও ভাষা সংগ্রামীরা বরাবরের মতোই অবহেলিত। মফস্বলের ভাষা সৈনিকদের স্থানীয় প্রশাসন ভাষার মাসেও খোঁজ নেয় না। সব ভাষা সংগ্রামীদের রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শন করা উচিত। মনে রাখতে হবে ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীনতা যুদ্ধের বীজ রোপিত হয়েছিল। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের উত্তাল দিনগুলোতে ভাষা সংগ্রামীদের বীরত্বপূর্ণ আন্দোলনের কারণেই একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। তাই ভাষা শহীদ ও ভাষা সংগ্রামীদের তালিকা প্রনয়ন করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।’