বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের বিচার পতির সাথে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাক্ষাৎ আলা উদ্দিনের কারনেই হয়েছিল আইন শৃংখলার অবনতি রূপগঞ্জে ইয়াবাসহ জিয়া মঞ্চ দলের নেতা গ্রেফতার নাশকতা মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেফতার।। নারায়ণগঞ্জ ইয়ং ফাইটার্স ক্লাবের খেলোয়াড়দের ট্রাকস্যুট ও জার্সি প্রদান ইয়াসিন ডাকাতের আতঙ্কে রয়েছে গাড়ির ড্রাইভার হেলপাররা তিনি লাইসেন্সধারী দালাল, হাতান তিনগুণ টাকাও বকশীগঞ্জে অবৈধ ড্রেজার বন্ধে অভিযান।। বাণিজ্য মেলায় নকল পণ্যের ছড়াছড়ি । ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে লক্ষ টাকা জরিমানা ২২ জানুয়ারী মওলানা ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৫৩তম বার্ষিকী

ব্রেকিং নিউজ
#বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের বিচার পতির সাথে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা প্রেস ক্লাবের সাক্ষাৎ#আলা উদ্দিনের কারনেই হয়েছিল আইন শৃংখলার অবনতি#রূপগঞ্জে ইয়াবাসহ জিয়া মঞ্চ দলের নেতা গ্রেফতার#নাশকতা মামলায় বিএনপি নেতা গ্রেফতার।।#নারায়ণগঞ্জ ইয়ং ফাইটার্স ক্লাবের খেলোয়াড়দের ট্রাকস্যুট ও জার্সি প্রদান#ইয়াসিন ডাকাতের আতঙ্কে রয়েছে গাড়ির ড্রাইভার হেলপাররা#তিনি লাইসেন্সধারী দালাল, হাতান তিনগুণ টাকাও#বকশীগঞ্জে অবৈধ ড্রেজার বন্ধে অভিযান।।#বাণিজ্য মেলায় নকল পণ্যের ছড়াছড়ি । ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে লক্ষ টাকা জরিমানা#২২ জানুয়ারী মওলানা ভাসানীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৫৩তম বার্ষিকী#জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নাসিক ৩নং ওয়ার্ড যুবদলের মিলাদ ও খাবার বিতরণ#এনামুল হক স্বপন ও সাইফুদ্দিন মাহমুদ ফয়সাল কে হাসান আল মামুনের শুভেচ্ছা#বকশীগঞ্জে ভোরের দর্পণের ২৫ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত।।#শেরপুরে ৭৭ তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের ১২ জন প্রশিক্ষনার্থী’র সংযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা#দিরাইয়ের সরমঙ্গল ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন জুয়েল সাময়িকভাবে বরখাস্ত#সৌদি আরবে “ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামিলি সোসাইটি”র বনভোজন ও নাশিদ সন্ধ্যা#শ্রীবরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তার সাথে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত#মির্জাপুরে পুরনো শত্রুতার জের ধরে মারামারি,আহত-১০ ‎#বকশীগঞ্জে এশিয়ান টেলিভিশনের ১৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত।।#বাঞ্ছারামপুরে কোরআন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত আলেমদের পদচারণায় মুখরিত এলাকা

ট্রাম্পের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক / ৮৪ বার পড়া হয়েছে
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৪০ অপরাহ্ন
ট্রাম্পের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন

প্রকাশের সময় 07/11/2024

যুক্তরাষ্ট্রে দুই মেয়াদের প্রেসিডেন্টের সংখ্যা নেহাত কম নয়। জর্জ ওয়াশিংটন ও থমাস জেফারসন থেকে শুরু করে রোনাল্ড রিগ্যান, বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বারাক ওবামা পরপর দুই মেয়াদে নির্বাচিত। তারা সবাই টানা ৮ বছর করে কাটিয়েছেন হোয়াইট হাউসে। তবে বিগত ১০০ বছরে এক মেয়াদ প্রেসিডেন্ট থাকার পর হেরে আবার হোয়াইট হাউসে ফিরতে পারেননি কেউ। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক মেয়াদ হেরে আবার ফিরছেন। সে কারণে এবারের জয়কে ট্রাম্পের ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন বলা হচ্ছে। একই সঙ্গে সিনেটেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রিপাবলিকানরা। মঙ্গলবারের নির্বাচনে জয়ী হয়ে ৭৮ বছর বয়সি ট্রাম্পই দেশের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে তিনিই প্রথম ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডিত প্রেসিডেন্টও। এসব কারণেও তার প্রত্যাবর্তন ঐতিহাসিক। আনুষ্ঠানিক বিজয় নিশ্চিতের আগেই বিজয় ভাষণ দিয়েছেন তিনি। ভাষণে তিনি যুদ্ধ বন্ধের অঙ্গীকার করেছেন। আমেরিকার ক্ষত সারিয়ে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন।যদিও বিশ্লেষকরা উল্টোটাই ভাবছেন। নির্বাচিত হলে গাজায় যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুত দিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস। বিপরীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বিভাজনের রাজনীতির ছক অনুযায়ী অভিবাসী তাড়ানোর হুঙ্কার দিয়েছেন। ২০২০ সালে হোয়াইট হাউস ছেড়ে ভুল করেছিলেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন। সবমিলিয়ে তিনি এক ভীতিকর আবহ সৃষ্টি করেছিলেন। ট্রাম্পের বিজয়কে তাই আশার বিপরীতে ভয়ের বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসায় বিভক্তি ও বিভাজনের রাজনীতি আরও জোরালো হবে। বিরোধীদের প্রতি তিনি উন্মত্ত প্রতিশোধ নিতে পারেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের বিশ্লেষণে এও বলা হচ্ছে, ট্রাম্পের অধীনে এক বিপজ্জনক যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বিশ্ব।

আরও পড়ুন– যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে টানাপোড়েন কেটে গেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

ট্রাম্পের এ জয় ১৩২ বছর আগের আমেরিকায় ফিরতে প্ররোচনা দেয়। তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড। ট্রাম্পের আগে এই ক্লিভল্যান্ডই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র প্রেসিডেন্ট, যিনি দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন, তবে তা ধারাবাহিক ছিল না। প্রথমে গ্রোভার ক্লিভল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৮৮৫ থেকে ১৮৮৯ সাল পর্যন্ত। দ্বিতীয় মেয়াদে দাঁড়িয়েও তিনি পরাজিত হন। এরপর তিনি ১৮৯২ সালে আবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হন। ১৩২ বছর পর ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনকে তাই ‘অসাধারণ’ বলা হচ্ছে।

নির্বাচনের আগে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কথার লড়াই আর বিভক্তির রাজনীতিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যুক্তরাষ্ট্র। শুরু থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠান এই দুই প্রার্থীর মাঝে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিয়ে আসছিল। যদিও এসব জরিপের বেশিরভাগেই নীল শিবিরের প্রার্থী কমলাকেই খানিকটা এগিয়ে রাখতে দেখা যায়। তবে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত দেশটির ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতিতে অটল ডোনাল্ড ট্রাম্পকেই বেছে নিয়েছেন মার্কিন ভোটাররা। যুক্তরাষ্ট্রের মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য ২৭০টির প্রয়োজন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত নির্বাচনি ফল অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশ সময় বুধবার পৌনে ৪টার দিকেই এই ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যান। দেশটির নির্বাচনে ফল নির্ধারণী যুদ্ধক্ষেত্র রাজ্যখ্যাত জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, ফ্লোরিডা, মেইন, পেনসিলভানিয়ায় লাল শিবিরের জয়ে হোয়াইট হাউসের মসনদ নিশ্চিত হয়ে যায় ট্রাম্পের। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। কমলার সঙ্গে ট্রাম্পের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। বিশেষ করে দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর ভোটের ফলে নজর ছিল সবার। তবে নির্বাচনের ফলাফলে অবশ্য তার প্রতিফলন দেখা যায়নি। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ৬টার দিকে মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণী দোদুল্যমান রাজ্যখ্যাত উইসকনসিনের ফল প্রকাশের সাথে সাথেই ট্রাম্পের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। এই অঙ্গরাজ্যের ১০টি ইলেকটোরাল ভোটের মাধ্যমে ম্যাজিক ফিগার ২৭০ পেরিয়ে যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টার দিকে যখন এই খবর লেখা হচ্ছে, ততক্ষণে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২৭৯টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট দলীয় কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ২২৩টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। তখন পর্যন্ত কয়েকটি রাজ্যে আংশিক ভোটগণনা বাকি ছিল। কেবল ইলেকটোরাল কলেজ ভোটই বেশি পাননি ডোনাল্ড ট্রাম্প, বরং পপুলার ভোটও প্রায় ৫০ লাখ বেশি পুরেছেন নিজের ঝুলিতে।

আরও পড়ুন– মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: এক নজরে দুই প্রার্থী

আনুষ্ঠানিক ফল নিশ্চিত হওয়ার আগেই ফ্লোরিডার পাম বিচ কাউন্টি কনভেনশন সেন্টারে বিজয় ভাষণ দিয়েছেন ট্রাম্প। লাল ঢেউয়ের গর্জনে মেতে ওঠা সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমেরিকা আমাদের এক অভূতপূর্ব ও শক্তিশালী ম্যান্ডেট দিয়েছে।’ বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমেরিকার জনগণের জন্য এটি চমৎকার জয়। এটা আমাদের আমেরিকাকে আবার মহান করার সুযোগ দেবে।’ ট্রাম্প তার ভাষণে বলেছেন, ‘আমরা আমাদের দেশকে ক্ষতমুক্ত করতে যাচ্ছি। ভাষণে যুদ্ধ বন্ধের বার্তাও দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, ‘আমি যুদ্ধ শুরু করব না, আমি যুদ্ধ থামাব।’ তার এই বক্তব্য বিশ্বব্যাপী চলমান সংঘাত বন্ধের এক নতুন প্রতিশ্রুতি হিসেবে ধরা হচ্ছে। ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তির পক্ষে কাজ করার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যা তার অন্যতম নীতিগত সিদ্ধান্তের প্রতিফলন। তিনি ভাষণে নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করলেও ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের চলমান যুদ্ধ নিয়েই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন। ভাষণে ট্রাম্প বলেছেন, ‘ঈশ্বর একটি কারণে আমার জীবন রক্ষা করেছেন।’ ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মূলত এবারের নির্বাচনি প্রচার চলাকালে দুই দফা হত্যাচেষ্টা থেকে তার বেঁচে যাওয়ার ঘটনাকে ইঙ্গিত করেন। বলেন, ‘আর ওই কারণ হলো, আমাদের দেশকে রক্ষা ও যুক্তরাষ্ট্রের মহিমা পুনরুদ্ধার করা। এখন আমরা একত্রে ওই লক্ষ্য পূরণ করতে চলেছি।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমাদের সামনে যে কাজ রয়েছে, তা সম্পাদন করা সহজ হবে না। কিন্তু আপনারা যে দায়িত্ব আমার ওপর অর্পণ করেছেন, তা পালন করতে আমি সর্বাত্মক চেষ্টা চালাব।’

আরও পড়ুন– সদর উপজেলা প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত

২০১৬ সালের নভেম্বরে নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে বারাক ওবামার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন ট্রাম্প। নব্য উদারবাদী অর্থব্যবস্থা মানুষকে যেখানে বিপন্ন করেছিল, ট্রাম্পের হাত ধরে নগ্ন বাজার আর পুরনো সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ সেখানে নিজের উত্থান ঘোষণা করেছিল। ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির মধ্য দিয়ে স্পষ্ট সূত্রে তিনি বিভক্ত করেন মার্কিনসহ বিশ্বজনতাকে। ‘আমরা’ আর ‘ওরা’ বিভাজনের মধ্য দিয়ে ঘৃণার বেসাতি ছড়ান কৃষ্ণাঙ্গ-মেক্সিকান-মুসলমানদের বিরুদ্ধে। তার ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ স্লোগানও আমেরিকার পুরোনো বর্ণবাদী শ্রেষ্ঠত্বকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আবিষ্কারের নামে রেড ইন্ডিয়ানদের হত্যা করে শ্বেতাঙ্গ বাস্তবতা নির্মাণ করেছিল তারা। সবমিলিয়ে তার রাজনীতির গন্তব্য হয় তাই অভিবাসনবিরোধিতা, কৃষ্ণাঙ্গ কিংবা মুসলমান বিরোধিতা। এবারও তিনি একই পথ নিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির উত্তর আমেরিকা-বিষয়ক সম্পাদক সারাহ স্মিথ জানাচ্ছেন, ‘নির্বাচনি প্রচারের সময় আমি যত মানুষের সাথে কথা বলেছি, তাদের অধিকাংশই বলেছেন, তারা সুযোগ পেলে ট্রাম্পের ‘দুর্গন্ধযুক্ত কথাবার্তা’ বন্ধ করে দিতেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার পক্ষপাতী। সারাহ জানাচ্ছেন, ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া বহু মানুষ বলেছেন, তারা মনে করেন ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন তারা বর্তমানের চেয়ে ভালো ছিলেন। অর্থনৈতিক মন্দা বা মূল্যস্ফীতির মতো অর্থনৈতিক সংকটের জন্য বাইডেন প্রশাসন দায়ী বলে মনে করেন ভোটারদের একটা বড় অংশ। এবারের নির্বাচনি প্রচারে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ স্লোগান ভোটারদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। সারাহ স্মিথ বলেছেন, আমেরিকাজুড়ে ডানপন্থি ও বামপন্থিদের মধ্যে আমি হতাশা দেখতে পেয়েছি একটি বিষয়কে ঘিরে; সেটি হলো- তারা মনে করেন ইউক্রেনে যে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করা হচ্ছে তা যদি আমেরিকার ভেতরে খরচ করা হতো তাহলে তা আমেরিকার অর্থনীতিকে অনেক শক্তিশালী করতে পারতো। এ বিষয়টি মাথায় রেখে অনেকেই কমলা হ্যারিসকে ভোট দিতে পারেননি; যিনি চার বছর জো বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তারা মনে করেছেন, কমলা হ্যারিসকে ভোট দিলে ইউক্রেন-বিষয়ক নীতি অনেকটা এক রকমই থাকত। এদিকে বৈশ্বিক গবেষণা সংস্থা এডিসন রিসার্চ বলছে, ৭৮ বছর বয়সী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টিরও বেশি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়ে বুধবার হোয়াইট হাউস পুনরুদ্ধার করেছেন, যা দেশটিতে চলমান মেরুকরণের রাজনীতিকে আরও গভীর করে তুলেছে।

ডেভিড স্মিথ দ্য গার্ডিয়ানে লিখেছেন, ট্রাম্পের এই জয় আশার বিপরীতে ভীতির বিজয়। নিজের কলামে ট্রাম্পের শাসনামলে করোনাভাইরাসে ৪ লাখ মৃত্যু, বেকারত্বের আধিক্য আর দেশজুড়ে বিভক্তির ছড়াছড়ির প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন তিনি। আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, ট্রাম্প রাতারাতি স্বৈরাচারে পরিণত হবে না কিন্তু এখন কোনো সন্দেহ নেই যে এটা একটা ক্ষয়িষ্ণু গণতন্ত্র। তার মতে, ট্রাম্পকে একবার নির্বাচিত করাকে দুর্ভাগ্য বলে গণ্য করা যেতে পারে। তবে তাকে দুবার নির্বাচিত করা নির্বোধের কাজ।

রয়টার্সের এক বিশ্লেষণী প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় যুক্তরাষ্ট্র এবং বাকি বিশ্বের জন্য বিপজ্জনক এক নতুন যুগের সূচনা করেছে। তৃতীয় নির্বাচনি প্রচারের মাধ্যমে পাওয়া বিজয়ের পর বুধবার ‘আমেরিকার সোনালি যুগের’ সূচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, বৈশ্বিক বিভিন্ন করপোরেশন ও বিনিয়োগকারীর জন্য যেকোনো স্বল্পমেয়াদি লাভ শেষাবধি ভালো ফল নাও দিতে পারে। ট্রাম্পের কর্তৃত্ববাদী প্রবৃত্তি মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাকে আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলতে পারে। তার এই বিজয় ইতোমধ্যেই ভঙ্গুর বৈশ্বিক ভারসাম্যকে আরও ঝুঁকিতে ফেলেছে। রয়টার্সের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়ীদের শুল্ক হ্রাস, নিয়ন্ত্রক সংস্থার জোরালো পদক্ষেপ এবং আদালতের অনুকূল সিদ্ধান্ত বিষয়গুলোকে জটিল করে তুলতে পারে। আগামী বছর কর্পোরেট করের হার ২১ শতাংশের বেশি করার সম্ভাবনা এখন কার্যত শূন্য। যদিও হ্যারিস এই হারকে ২৮ শতাংশে উন্নীত করতে চেয়েছিলেন। সিনেটে রিপাবলিকান পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় সেই সম্ভাবনা এখন নেই বললেই চলে। রিপাবলিকানরা তাদের প্রথম মেয়াদে সেটি করতে ব্যর্থ হওয়ার পর বিভক্ত সরকার ট্রাম্পের পক্ষে অ্যাফর্ডবেল কেয়ার অ্যাক্ট সংশোধন করায় বিষয়টি আরও কঠিন হয়ে পড়ে। এছাড়া ক্রিপ্টো শিল্প সম্ভবত দীর্ঘ-আকাঙ্ক্ষিত বৈধতা পেতে পারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে। ট্রাম্পের জয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে ডলার ও বিটকয়েনের দরে উল্লম্ফন দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থায় ট্রাম্পের এই জয় সারা পৃথিবীর জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিশ্বের অর্থনীতি, সংঘাত, বাজার ব্যবস্থা এবং আরও বহুকিছুর ওপর প্রভাব ফেলবে এই নির্বাচনের ফল।দাবি জানান। ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। মঞ্চে উপস্থিত মেলানিয়াকে ‘ফার্স্টলেডি’ হিসেবে সম্বোধন করেন ট্রাম্প। বলেন, মানুষকে সহায়তার জন্য মেলানিয়া অনেক পরিশ্রম করেন। এ সময় উচ্ছ্বসিত ট্রাম্প তার স্ত্রী মেলানিয়ার গালে চুমু খান। মঞ্চে উপস্থিত থাকা সন্তানদেরও ধন্যবাদ জানান ট্রাম্প। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা সন্তানদের প্রত্যেকের নাম উল্লেখ করেন তিনি। তাদের ‘চমৎকার সন্তান’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। এদিকে ট্রাম্পের এ ঐতিহাসিক জয়ের পর সারা দেশে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বিজয় মিছিলে থাকা অনেক মানুষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এ জয়টা খুবই জরুরি ছিল। কারণ, মূল্যস্ফীতির চাপে মার্কিন জনগণ এখন চিড়েচ্যাপ্টা। অর্থনীতির অবস্থা ভালো নয়। এ অবস্থা থেকে শুধু ট্রাম্পই দেশকে উদ্ধার করতে পারেন বলে তারা মনে করছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই কেটাগরির আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর