
প্রকাশের সময় 16/04/2025
মতলব উত্তরে মঞ্চায়িত হলো ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘কাজল রেখা’
লিয়াকত হোসাইন:

মতলব উত্তরে শিল্পকলা একাডেমিতে যাত্রাপালা কাজল রেখা দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়।
বাঙ্গালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত যাত্রাপালা। একটা সময় শহর কিংবা গ্রামে রাতভর মঞ্চস্থ হতো যাত্রাপালা। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভীড় করতো আসরে তাদের প্রিয় শিল্পীদের অভিনয় দেখার জন্য। আধুনিকায়নের এই যুগে হারিয়ে যেতে বসেছে সেই ঐতিহ্য।
তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতি পৌঁছে দিতে দীর্ঘদিন ১৭বছর পরে পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে মঞ্চায়িত হলো ঐতিহাসিক যাত্রাপালা ‘কাজল রেখা’।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাতে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমিতে (গজরা ইউনিয়ন) উৎসবমূখর পরিবেশে এই যাত্রাপালাটি মঞ্চায়িত হয়। যাত্রাপালাটি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শুভ উদ্বোধন করেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সদস্য আলমগীর সরকার।
গজরা ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার সফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন মতলব উত্তর থানার ওসি মো. রবিউল হক, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মনজুর আমিন স্বপন, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক খায়রুল হাসান বেনু, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ জামান টিপু, সদস্য সচিব ফয়সাল আহাম্মেদ সোহেল, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরুল হুদা ফয়েজী, ছেংগারচর পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফরহাদ হোসেন প্রমুখ। আব্দুল লতিফ প্রধান পরিচালিত ঐতিহাসিক যাত্রাপালা কাজল রেখা মঞ্চায়িত হয়েছে।
এসময় বাঙ্গালির বিনোদনের অন্যতম বাহক যাত্রাপালা দেখতে মুক্তমঞ্চে ভিড় করেন কয়েক হাজার নারী পুরুষসহ নানা বয়সী দর্শনার্থী।
যাত্রা দেখতে আসা দর্শনার্থীরা ইসমাইল খান জানান, এখন কোথাও যাত্রাপালা হতে দেখি না। এখানে যাত্রাপালা হবে শুনে দেখতে এসেছি। তবে দীর্ঘ দিন পর হলেও যাত্রাপালার অনুষ্ঠান করায় আমরা অনেক খুঁশি।
মোহন মিয়া নামে আরেক দর্শনার্থী, যাত্রাপালা বাঙ্গালির সংস্কৃতির একটি অংশ কিন্তু আধুনিকায়নের ফলে এটি হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে আগামীতেও এমন আয়োজনের প্রত্যাশা করছি।
আয়োজকরা জানান, বাঙ্গালির প্রাণের অনুষ্ঠান হলো যাত্রাপালা। কিন্তু ফ্যাসিবাদ সরকার ভারতীয় হিন্দি সিরিয়ালের মাধ্যমে এ দেশে বাঙালী সংস্কৃতির করব রচনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু এ দেশের ছাত্র জনতা তা করতে দেয় নি।
তারা আরো বলেন, দীর্ঘদিন অবহেলার কারণে সাংস্কৃতি অঙ্গন থেকে যাত্রাপালা প্রায় বিলুপ্তির পথে এবং এ শিল্পের সাথে যারা জড়িত রয়েছেন তারা দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। যাত্রাপালার চর্চার মাধ্যমে তারা আবার ফিরে আসবেন। আয়োজকরা মনে করেন এ শিল্পটির পূর্ণজাগরণ দরকার। বিএনপি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসলে সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহযোগিতায় আবারও বাঙ্গালির প্রাণের সংস্কৃতি যাত্রাপালা পূর্বের মতো মঞ্চায়িত হবে। যাত্রা শিল্পীদের অভিনয়, সুর, ছন্দ ও নৃত্যের মোর্ছনায় বাঙ্গালীর সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত যাত্রাপালা যাত্রাপ্রেমীদের মনকে আনন্দিত করবে যুগ থেকে যুগান্তরে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।